Breaking

Friday, May 10

মামা কি জিনিস লইয়া ঘুরতাছে দেখছস? পুরাই পিনিক!

 মামা কি জিনিস লইয়া ঘুরতাছে দেখছস? পুরাই পিনিক!

কোথায় বসবাস করি আমরা বিবেক বলতে কিছু নেই।
 বোনকে নিয়ে বের হইছি। রেজাল্ট দেওয়ার আগে বলেছিল- 'ভাইয়া আমি যদি পাশ করি তাহলে আমাকে ঘুরতে নিয়ে যাবে; রেস্টুরেন্টে খাওয়াবে।' একমাত্র বোন আমার। পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়েছে আজ; জিপিএ ৪.৫০ পেয়েছে। আসলে ওর চেয়ে বেশি খুশি আমি হয়েছি। এত বেশি খুশি হয়েছি বলে বুঝানো যাবেনা। তাই তার ইচ্ছেটা পূরণ করার জন্যই বের হয়েছি ওকে নিয়ে।
রিক্সা করে মাত্র কিছুটা এসেছি। রাস্তার মোড় পাস করতেই দুইটা ছেলে কমেন্ট করে বসলো- মামা কি জিনিস লইয়া ঘুরতাছে দেখছস? পুরাই পিনিক!
আমি রাগে-লজ্জায় বোনের পাশে আর বসে থাকতে পারছিলাম না। বোন আমাকে জোর করে ধরে না রাখলে এদের মেরে অবস্থা খারাপ করে ফেলতাম। বোনের দিকে তাকাতে পারছিনা লজ্জায়। বোন নিয়ে কেউ এমন কমেন্ট করতে পারে? বিশ্বাস করুন আমি যেন তখন আর বেঁচে নেই।
রেস্টুরেন্ট এসে বসেছি। বোন এবং আমার জন্য খাবার অর্ডার করলাম। কিছুক্ষন পর আবার ওয়েটার এসে কানে কানে বলে গেলো- স্যার স্পেশাল রুম লাগবে; একদম সেফটি।
কথাটা শুনার পর ওয়েটারকে ইচ্ছে করছিল; জিহ্বাটা টেনে ছিঁড়ে ফেলতে। একটা রেস্টুরেন্টে কি প্রেমিক-প্রেমিকা ছাড়া অন্য কেউ যায় না? একেকটা ঘটনায় নিজের কাছে নিজেকে অসহ্য লাগছে। বিলটা পেমেন্ট করেই রিক্সা নিলাম বাসায় যাওয়ার জন্য।
বোন বলল- ভাইয়া কোথাও ঘুরতে নিয়ে যাবেনা? চলোনা ভাইয়া ফয়েজলেক যাবো। ওখানে নাকি অনেক সুন্দর।
বোনকে বললাম- না আজ আর যাবোনা; অন্য একদিন নিয়ে যাবো।
মনে মনে ভাবছি নিজের বোনকে নিয়ে এখন পর্যন্ত যা শুনলাম এর পর যদি আর কিছু শুনি আমার সহ্য হবেনা। বোনও বোধয় বুঝতে পেরেছে তাই আর কথা না বলে চুপচাপ চলে এসেছে। রাস্তায় ও কয়েকটা কটু কথা শুনতে হয়েছে আসার সময়।
বাসায় এসে মন খারাপ করে রুমে বসে আছি। খুব খারাপ লাগছে নিজের কাছে। চোখ বেয়ে পানি ঝরছে; মানুষ কিভাবে না জেনে-শুনে আন্তাজে বাজে কমেন্ট করতে পারে। পৃথিবীতে অনেক ভাই আছে; যারা নিজের বোনদের নিয়ে বের হয়। তাই বলে তাকে এসব শুনতে হবে? ঘৃণা করি সমাজের সেসব বখাটেদের; খারাপ লোকদের। যাদের জন্য আমরা ছেলে জাতিরা আজ কলঙ্কিত; মাথা নিচু।

No comments:

Post a Comment