Breaking

Friday, January 25

স্বপ্নের রাজকন্যা


স্বপ্নের রাজকন্যা



প্রত্যেক মানুষের তার স্বপ্নের রাজকন্যাকে হয়তো নীল শাড়িতে ও লাল শাড়িতে অনুভব করতে চাই। কিন্তু আমি তোকে প্রথম দেখেছিলাম সাদা শাড়িতে। হ্যাঁ, অবশ্যই কোনো এক শেষ বিকেলে । প্রেমে পড়ার মতো কোনো সাজ তোর ছিল না। শুধু ছিলএকটা সরল সোজা মেয়ে। তারপর থেকে সে আমার অনুভূতিতে সেই সাদা শাড়ি পরা রাজকন্যাই। সেই প্রথম দেখা তুমি ছিলি শান্ত একটা মেয়ে, চুপ করে বসে থাকা,যেন কোন মায়ের কোলে বসে থাকা ছোট্ট একটি মাসুম বাচ্চা। আজ তুই চঞ্চল, কথায় কথায় তোর দুষ্টুমি। আমার দেখা তুই ছিলি ভাবগম্ভীর অন্যভাবে বলা যায় প্রেমে পড়বি না এমন কথা। আজ সেই তোর আমার মাঝেই বিচরণ করে আছে একটুকর ভালোবাসা। যুক্তিবিদের মতো তোর কথার যুদ্ধে আমি কখনোই জয়ী হতে পারিনি। আর আজ তোর অযৌক্তিক কথার যুক্তি আমার কাছে নেই। মনের ‘বাচ্চামি’ লুকিয়ে রাখা তুই আজ বাচ্চাই হয়ে গেছিস। হ্যাঁ, সেইত আমার জীবনের প্রথম ও শেষ। প্রেম করেছি ছয় বছর। আর বিয়ের বয়স হলো তিন বছর।আমি আমার মতোই সাজিয়ে নিয়েছি। জানি, সে আর পাঁচটা মেয়ের মতো স্বাভাবিক না। আমরা যখন দ্বাদশ ইয়ারে পড়ি, তখন একটা ঘটনায় ওর মাথায় আঘাত লাগে। চিকিৎসা করানোর মতো তেমন কোন টাকা ছিল না। আমিও করাতে পারিনি। সেই অপরাধবোধ আমি আজও মুছতে পারিনি। তারপর আস্তে আস্তে কয়েক বছর ধরে ওর অস্বাভাবিক হয়ে যাওয়া। যখন বিয়ে করি আম্মা-খালারা বলেছিল, এই মেয়ে তো পাগল। এর বোঝা জীবনে নিচ্ছিস কেন?আমি বলেছিলাম, নিজের জীবন কখনো নিজের কাছে বোঝা হয় না। এরপর আছি ওর সঙ্গে। কাজ সামলানো আর তারপর আমার অরোরাকে সামলানো এই তো আমার জীবন।আমরা আগে যখন আমরা দেখা করতাম, অরোরা সব সময় আমার চুলগুলো ঠিক করে দিয়ে বলত—এই তোর চুলগুলো এমন কেন রে? আর আজকে আমিই ওর চুল বেঁধে দিই। ঝুম বৃষ্টিতে ভেজা মেয়েটা আজকে বৃষ্টি ভয় পায়, রাতবিরাতে ঘুরতে চাওয়া মেয়েটা আজকে অন্ধকার ভয় পায়। এখন একটু চিকিৎসা করানর জন্য একটু সাভাবিক হয়েছে । আমার অবুঝ বউটা আমাকে এখন চা বানিয়ে খাওয়াতে পারে। কথাগুলো গুছিয়ে বলতে শিখেছে, জেদ ছেড়েছে। বিকেলবেলা হাঁটতে গেলে সে এখন হাত ধরেই হাঁটে। একা একা চোখে কাজল পরতে পারে। আমি যখন প্রতিদিন কোলে শুইয়ে যখন ঘুম পাড়িয়ে দিই, আমি একটাই প্রার্থনা করি তুই যেমনই হোস আথবা যাই হোস, তুই শুধু আমায় ছেড়ে যাস না কখনো।

No comments:

Post a Comment